ফরিদপুরে নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে পল্লীকবি জসীমউদ্দীন এর ৪৯তম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত হয়েছে। এ উপলক্ষে শুক্রবার (১৪ মার্চ) সকালে কবি কবরে ফুলের শ্রদ্ধা, আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সকাল ১০টায় শহর তলীর অম্বিকাপুরে কবির কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক ও জসিম ফাউন্ডেশনের সভাপতি মো. কামরুল হাসান মোল্লা, পুলিশ সুপার মো. আব্দুল জলিল। ফরিদপুর প্রেসক্লাব, জেলা শিল্পকলা একাডেমী, ফরিদপুর সাহিত্য ও সংস্কৃতি উন্নয়ন সংস্থা, ফরিদপুর সাহিত্য পরিষদ, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, আনসারউদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়, ফরিদপুর সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, ফরিদপুর আবৃত্তি সংসদসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন কবির কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
পরে জেলা প্রশাসন ও জসিম ফাউন্ডেশনের আয়োজনে কবির বাড়ির আঙ্গিনায় আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠিত হয়। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মিন্টু বিশ্বাস এর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক মো. কামরুল হাসান মোল্যা, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আব্দুল জলিল, অতিরিক্ত জেলা প্রসাশক (উন্নয়ন ও মানবসম্পদ) সুস্মিতা সাহা, প্রবীণ শিক্ষাবিদ অধ্যাপক এমএ সামাদ, কবিপুত্র খুরশিদ আনোয়ার, প্রফেসর আলতাফ হোসেন, সাংবাদিক ও লেখক মফিজ ইমাম মিলন, বিএনপি নেতা এএফ কাইয়ুম জঙ্গী, জামায়াত নেতা অধ্যাপক আব্দুত তাওয়াব, জেলা শিল্পকলা একাডেমীর কালচারাল অফিসার সাইফুল হাসান মিলনসহ অন্যান্যরা।
অনুষ্ঠানে কবিকে স্মরণীয় করে ধরে রাখতে তার গল্প, কবিতা, উপন্যাস চর্চার তাগিদ দেন বক্তরা। পরে কবির রুহের মাগফিরাত কামনায় দোয়া অনুষ্ঠিত হয়।পল্লী কবি জসীমউদ্দীন ১৯০৩ সালের ১ জানুয়ারি ফরিদপুর সদর উপজেলার কৈজুরী ইউনিয়নের তাম্বুলখানা গ্রামের মাতুলালয়ে জসীমউদ্দীন জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৯৭৬ সালের এই দিনে ৭৩ বছর বয়সে ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন। ওই দিনই তাকে ফরিদপুর সদরের অম্বিকাপুর গোবিন্দপুর গ্রামের পৈত্রিক বাড়ির আঙিনায় সমাহিত করা হয়।
ছাত্রজীবনে লেখা তার “কবর’ কবিতাটি পাঠ্যসূচিতে অন্তর্ভূক্ত হলে তিনি ব্যাপক পরিচিতি পেয়ে যান। ‘নিমন্ত্রণ’, ‘আসমানী’ তার বহুল পঠিত কবিতাগুলির অন্যতম। এছাড়া মধুমালা, বেদের মেয়ে, সোজন বাদিয়ার ঘাট, নকশী কাঁথার মাঠ, ঠাকুর বাড়ির আঙিনায়, বাঙালির হাসিবর গল্প, প্রভৃতি লেখায় গ্রাম বাংলার মানুষের হাসি-কান্না, আশা-আকাঙ্খার মাধ্যদিয়ে বাংলার শ্বাশত রূপ ফুটিয়ে তুলেছেন। তিনি পল্লি সাহিত্যকে বিশ্ব সংসারে নিয়ে গেছেন। এজন্যই তিনি বাংলা সাহিত্য জগতে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন এবং পল্লীকবি হিসেবে বিশেষ পরিচিতি লাভ করেন।